পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অর্থনৈতিক অবস্থা বর্তমানে চরম সংকটে। একদিকে সামাজিক প্রকল্পের অর্থ জোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার, অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রাজ্য সরকারকে ২৫% ডিএ বকেয়া পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রীদের স্কলারশিপ বন্ধ, সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ, এবং অন্যান্য আর্থিক দায়িত্ব নিয়ে রাজ্য সরকার কীভাবে সামাল দেবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে!
Scholarship, DA, অর্থসংকটে পশ্চিমবঙ্গ সরকার? অর্থ ফেরতের নির্দেশ বিভিন্ন দপ্তরে
সম্প্রতি অর্থ দপ্তরের তরফ থেকে এক জরুরি সার্কুলার (১৬২৯-FY) পাঠানো হয়েছে সমস্ত দপ্তরে। সেখানে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, গত আর্থিক বছরের (২০২৪-২৫) অব্যবহৃত অর্থ এই মাসের মধ্যেই ফেরত দিতে হবে। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য রাজ্যের সংকুচিত কোষাগারে কিছুটা হলেও নগদ প্রবাহ ফিরিয়ে আনা।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ: ডিএ বকেয়া পরিশোধে চাপ
১৬ মে, সুপ্রিম কোর্ট পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে নির্দেশ দেয় যে, তারা তিন মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ২৫% ডিএ বকেয়া পরিশোধ করবে। এই নির্দেশের ফলে রাজ্য সরকারের উপর প্রায় ₹১০,৪৪২.৭৩ কোটি টাকার অতিরিক্ত আর্থিক চাপ পড়েছে। এই নির্দেশের ফলে রাজ্য সরকারের আর্থিক সংকট আরও গভীর হয়েছে।
WB Scholarship: স্কলারশিপ বঞ্চনার চিত্র! শিক্ষার্থীরা দিশেহারা
একদিকে সরকার অর্থ ফেরত চাইছে, অন্যদিকে এখনও স্কুল-কলেজের স্কলারশিপ আবেদনগুলি অনুমোদন পর্যন্ত পৌঁছায়নি। বহু ছাত্রছাত্রী Swami Vivekananda Scholarship, OASIS Scholarship, এবং Nabanna Scholarship-এর আবেদন করেছে, কিছু ক্ষেত্রে স্কুল স্তরে টুকটাক টাকা দেওয়া হলেও কলেজ স্তরে এখনও স্কলারশিপ পাওয়া যায়নি।
আবেদন করেও কেউ কেউ “Application Approved” পাচ্ছে না, অর্থ ফেরতের এই অবস্থায় ভবিষ্যতে কয়েক মাসের মধ্যে এই স্কলারশিপগুলি কার্যকর হবে কি না, তা নিয়ে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম অনিশ্চয়তা।
দেখতে পারো: Student Bank Account: পড়ুয়াদের জন্য কোন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ভালো? স্কলারশিপ ও অন্যান্য সুবিধা
SVMCM, OASIS, Nabanna স্কলারশিপ পাওয়া যাবে তো?
এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন — কী হবে? আসন্ন মাসগুলিতে নতুন করে টাকা পাওয়া কঠিন হবে, ফলে যারা স্কলারশিপ অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে, তাদের হয়তো টাকা নাও মিলতে পারে! কিংবা কবে ঠিক পাওয়া যাবে সেই প্রশ্নের সদ-উত্তর দিতে পারছে না, কোন স্কলারশিপ দপ্তর।
বিশেষ করে মেধাবীদের জন্য রাজ্যের স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ (SVMCM) যার ওপর ভরসা করে অনেক ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা চলে – যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও টাকা আটকে অনেকেই ইতিমধ্যেই হোস্টেল ফি, কলেজ ফি, কোচিং ফি বা বইয়ের খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছে, এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি সরকারের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
নিজস্ব মতামত
একদিকে অর্থনৈতিক চাপের কথা বলে অব্যবহৃত বরাদ্দ ফেরত নেওয়ার চেষ্টা করছে নবান্ন, অন্যদিকে সত্যিকারের প্রয়োজনীয় খাতে — যেমন স্কলারশিপ কিংবা জরুরী শিক্ষাখাত — সেগুলোর বরাদ্দই সঠিকভাবে পাচ্ছে না যোগ্য মেধাবী পড়ুয়ারা। অপরদিকে স্কুলের শিক্ষা সংকট, শিক্ষক শিক্ষিকিকাদের চাকরি চলে গেছে স্কুলের অবস্থা বেহাল।
সরকারের এই অর্থনৈতিক দিশাহীনতা থেকে ছাত্রসমাজের ভরসা উঠে যাচ্ছে। Government of West Bengal – Egiye Bangla সরকারের উচিত জরুরি ভিত্তিতে স্কলারশিপ বিষয়ক আবেদনগুলিকে অনুমোদন করা এবং যথাযথ সময়ে অর্থ ছাড় করা, নচেৎ একটি প্রজন্ম শিক্ষা থেকে ছিটকে পড়ার ঝুঁকিতে থাকবে।
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত হোন -
আরও আপডেট »