বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক যুগে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এমন কিছু পেশার সন্ধান খুব দরকার যা সহজে শুরু করা যায়, বিশেষ করে কম খরচে ও দ্রুত সময়ে। এরকম একটি পেশা হল টেলিকলার (Telecaller)। অনেক ছাত্র-ছাত্রী কলেজে পড়ার সময় বা পাশ করার পর আয়ের মাধ্যম হিসেবে এই পেশাকে বেছে নেন। কলকাতা সহ ভারতের অন্যান্য শহরেও এই পেশার চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে।
এই ধরনের ক্যারিয়ারে বা পেশাতে ঢুকতে স্যালারি কিরকম কি হয়? এডুকেশনাল কোয়ালিফিকেশন বা অন্যান্য যাবতীয় সমস্ত তথ্য বিস্তারিত শেয়ার করা হলো।
টেলিকলার কীভাবে কাজ করেন? Telecaller Profession Details
যাঁরা বিভিন্ন সংস্থার পক্ষে ফোন করে গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, নতুন পরিষেবা জানান, বিক্রয় (Sales), মার্কেটিং বা গ্রাহক পরিষেবা (Customer Service) সংক্রান্ত কাজ করেন, তাঁদেরই বলা হয় টেলিকলার।
টেলিকলারের প্রধান কাজ হল ফোনের মাধ্যমে কোম্পানির পণ্য বা পরিষেবা নিয়ে গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলা। তাঁদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে:
- নতুন গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ করা (Lead Calling)
- বিদ্যমান গ্রাহকদের পরিষেবা সংক্রান্ত তথ্য দেওয়া
- বিক্রয় বাড়ানোর চেষ্টা করা (Sales Pitching)
- অভিযোগ গ্রহণ ও সমাধানে সহায়তা করা (Customer Support)
- কোম্পানির প্রচার ও বিজ্ঞাপন ফোনে করা।
Telecaller Job Qualification: কী যোগ্যতা লাগবে?
টেলিকলার পেশা শুরু করার জন্য উচ্চতর ডিগ্রির প্রয়োজন হয় না। তবে কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা এবং দক্ষতা দরকার:
- ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা: মাধ্যমিক (Class 10) বা উচ্চ মাধ্যমিক (Class 12)
- বাংলায় ও হিন্দিতে স্পষ্ট ও পরিষ্কারভাবে কথা বলার দক্ষতা
- ইংরেজি জানলে অতিরিক্ত সুবিধা।
- কম্পিউটার চালানোর প্রাথমিক জ্ঞান (Basic Computer Knowledge)
- ভাল শ্রবণ ক্ষমতা ও ধৈর্য।
আরো দেখবেন: Career for Arts Students: আর্টস নিয়ে পড়ে কি কি হওয়া যায়? রইলো সেরা 10 কেরিয়ার ও চাকরি
আগ্রহ ও বৈশিষ্ট্য (Interest & Personality Traits)
যাঁরা মানুষকে সাহায্য করতে ভালোবাসেন, কথা বলার আগ্রহ আছে এবং সহানুভূতিশীল মনোভাব রাখেন, তাঁদের জন্য এই পেশা উপযুক্ত। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য দেওয়া হল:
- ভালো কথোপকথনের দক্ষতা (Good Communication Skills)
- সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা (Problem-Solving)
- টিমে কাজ করার মানসিকতা (Team Spirit)।
স্পেশাল Soft Skill কোর্স (Soft Skill Training Course)
টেলিকলার বা যেকোনো কর্পোরেট পেশায় সফল হতে হলে শুধুমাত্র ভাষাজ্ঞান নয়, প্রয়োজন হয় আত্মবিশ্বাস, শ্রবণ দক্ষতা, সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা এবং পেশাদার আচরণ—এই সব কিছু নিয়েই আমরা তৈরি করেছি আমাদের Soft Skill Course, যা ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ চাকরির বাজারে টিকে থাকতে সাহায্য করবে।
- কমিউনিকেশন স্কিল (Communication Skills)
- ডিসকাশন ও প্রেজেন্টেশন স্কিল (Group Discussion & Presentation)
Soft স্কিল ট্রেনিং বা কোর্স করা থাকলে যে কোন প্রফেশনাল লাইনে অনেকটা সুবিধা হবে।
ক্যারিয়ার অপারচুনিটি (Career Opportunities)
টেলিকলার হিসাবে কাজ শুরু করে আপনি বিভিন্ন রকম দিক খুলে ফেলতে পারেন। অভিজ্ঞতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রোমোশনের সুযোগও থাকে।
- টেলিকলার → সিনিয়র টেলিকলার → টিম লিডার (Team Leader) → প্রজেক্ট ম্যানেজার (Project Manager)
- বিক্রয় বা গ্রাহক পরিষেবা বিভাগে উচ্চ পদে উন্নতি
- BPO (Business Process Outsourcing) সেক্টরে স্থায়ী চাকরির সুযোগ।
- ব্যাংকিং, ই-কমার্স, হেলথ কেয়ার, এডুকেশন, রিয়েল এস্টেট সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ।
অবশ্যই দেখুন: Journalist বা সাংবাদিক হতে কি নিয়ে পড়তে হয়? যোগ্যতা, দক্ষতা ও বেতন জেনে নিন
স্যালারি ও অন্যান্য সুবিধা (Salary & Benefits)
শুরুর দিকে একজন টেলিকলারের মাসিক বেতন ₹৮,০০০ – ₹১৫,০০০-এর মধ্যে হতে পারে। অভিজ্ঞতার সঙ্গে এই বেতন বৃদ্ধি পায়। কিছু কোম্পানি ইনসেনটিভ (Incentives), পারফরমেন্স বোনাস (Performance Bonus), ওভারটাইম ভাতা সুবিধাও দিয়ে থাকে।
বিশেষ সতর্কতা: এই ধরনের চাকরিতে জয়েন করার আগে অবশ্যই কোম্পানির প্রোফাইল এবং এমপ্লয়ি এগ্রিমেন্ট ভালোভাবে খুঁটিয়ে যাচিয়ে নেবেন। এক্ষেত্রে অনেক ছাত্রছাত্রী প্রতারণার শিকার হয়।
আরো দেখুন: Management Courses after 12th: উচ্চ মাধ্যমিকের পর ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়াশোনা, সেরা ৫ কোর্স দেখে নিন
কলকাতায় বিভিন্ন BPO ও সার্ভিস সেক্টরে টেলিকলারের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। আপনি যদি কথা বলায় আগ্রহী হন, মানুষের সমস্যায় সমাধান দিতে ভালোবাসেন, তাহলে আজই নিজেকে প্রস্তুত করুন টেলিকলার পেশার জন্য।
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত হোন -
আরও আপডেট »